Others
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ঢাকার একটি বিখ্যাত বাজার। এই বাজারটি জাপান গার্ডেন সিটির বিপরীত পাশে অবস্থিত। ১৯৮১ সালে এই বাজারের গোড়াপত্তন হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এই বাজারটি নিয়ন্ত্রন করেন। কৃষি মার্কেট মূলতঃ চাউলের জন্য বিখ্যাত। এখানে ১৫০টি পাইকারী চাউলের আড়ৎ রয়েছে। বর্তমানে অবশ্য এগুলোর পাশাপাশি কিছু মনিহারী দোকানও এখানে চালু হয়েছে। মার্কেটটি শুক্রবার অর্ধদিবস এবং শনিবার পূর্ণদিবস বন্ধ থাকে।
কৃষি মার্কেট যাত্রা শুরু করার কিছুকাল পরেই কৃষি মার্কেট সংলগ্ন বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে কৃষি মার্কেট নতুন কাঁচাবাজার ও কৃষি মার্কেট। এই কাচাবাজারে সবধরনের শাক-সব্জি পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় হয়। এছাড়া এখানে প্রচুর মাছ, মাংস, মুরগী, ডিম, মুদি সামগ্রী, ষ্টেশনারী সামগ্রী, দেশী-বিদেশী ফলের দোকান ও সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যায়। এই বাজারে সব বয়সী নারী ও পুরুষের তৈরী পোষাক, খেলনা, গিফট এন্ড ক্রোকারীজ, ইলেকট্রিক সামগ্রী, জুতার দোকান, তৈজস পত্র, প্লাষ্টিক সামগ্রী, জুয়েলারী, কসমেটিকস, মনিহারী ও প্রয়োজনীয় প্রায় সকল পণ্যের দোকানই রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ দোকান রয়েছে এই কাচা বাজারে। কৃষি মার্কেট এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু খাবার রেস্তোরা, চা-ষ্টল এছাড়া নানাবিধ পণ্য সামগ্রী ভাসমান দোকান। কাচাবাজারটিতে সাপ্তাহিক কোন ছুটির দিন নেই। এই কাচাবাজারটিও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রন করে থাকে। সরকারী নিয়ন্ত্রনাধীন এটি একটি বৃহৎ বাজার। এই বাজারকে কেন্দ্র করে এখানে প্রায় ২৫০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
কৃষি মার্কেটে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকসমাগম ঘটে। ঢাকার অপরাপর বাজারের তুলনায় দ্রব্যমূল্য এখানে কিছুটা কম। শুধু বাজার নয় আশ-পাশের অনেক ভবনেও দেখা যায় নিচতলা দোকান হিসেবে গড়ে উঠেছে।
রাইফেলস স্কয়ার
ধানমন্ডি এলাকার অভিজাত শপিং সেন্টার রাইফেলস স্কয়ার। ধানমন্ডি এলাকার মানুষের জীবনকে আরও উপভোগ্য ও সহজতর করতে রাইফেলস স্কয়ারের ভূমিকা অনেক। রাইফেলস স্কয়ারের পাশেই বিডিআর ক্যাম্প (বাংলাদেশ রাইফেলস) সদর দপ্তর অবস্থিত। মূলতঃ এই বিডিআর ক্যাম্পটির অবস্থানের কারনেই এই শপিংসেন্টারের নামকরণ হয়েছে রাইফেলস স্কয়ার। রাইফেলস স্কয়ারের একপাশে দৈনন্দিন পণ্য সামগ্রীর বৃহৎ বাজার আগোরা অবস্থিত। ধানমন্ডি লেকের বিপরীত পাশে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে নির্মিত হয়েছে এই মার্কেটটি।
আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও বিশাল স্থান জুড়ে মার্কেটটি নির্মিত হয়েছে। এটি চার তলা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক শপিং সেন্টার। সব মিলে ৩৫০টির উপরে দোকান রয়েছে এই মার্কেট ভবনটিতে। দেশী-বিদেশী সবধরনের উন্নতমানের তৈরী পোষাক, জুতা, কসমেটিকস, খেলনা, ক্রোকারীজ, গিফট, ইলেকট্রনিঙ্ সামগ্রী, কার্ড গ্যালারী, সিডি-ভিসিডির দোকান, মোবাইল, ফ্যাশন সামগ্রী, জুয়েলারী সহ প্রায় সব ধরনের পয়োজনীয় পণ্যই এখানে পাওয়া যায়। এখানকার পণ্য সামগ্রী গুনগতমানে ভাল এবং অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় পণ্যসামগ্রীর দাম এখানে কিছুটা বেশী। এছাড়া এই ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক ফুড কর্ণার যেখানে প্রচুর ক্রেতা বিশেষ করে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীর ভীড় দেখা যায়।
ঢাকার আধুনিক জীবনধারার সাথে মিল রেখে এই মার্কেটে রয়েছে সকল প্রকার সুবিধাদি। নিঃসন্দেহে এটি ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকার একটি অত্যাধুনিক শপিং মল যা মানুষের জীবনে এন দিয়েছে পাশ্চাত্যের আধুনিকতার ছোয়া। এই মার্কেটটি বাংলাদেশ রাইফেলস এর একটি প্রতিষ্ঠান এবং এটি বাংলাদেশ রাইফেলস কর্তৃক পরিচালিত হয়।
মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজার
মোহাম্মদপুর এলাকাটি ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকা ধানমন্ডি ও লালমাটিয়ার পাশর্্ববর্তী হওয়া সত্বেও এই এলাকায় এখনও আধুনিকতার ছোঁয়া ব্যাপকভাবে লাগেনি। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেনীর মানুষের আবাসস্থল হিসেবে এটি পরিচিত। যদিও কালের আবর্তে মোহাম্মদপুর থানার কিছু এলাকায় এখন বহুতল আধুনিক এ্যাপার্টমেন্ট ভবন তৈরী হয়েছে।
মোহাম্মদপুর তথা লালমাটিয়া এলাকার সবচাইতে বড় কাঁচাবাজার হলো ” মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজার”। স্বাধীনতা পরপরই যাত্রা শুরু করে এই বাজারটি দিনদিন প্রসার বৃদ্ধি করেছে। সরকারী ব্যাবস্থাপনায় নির্মিত এটি একটি বৃহদাকার দু’তলা বিশিষ্ট মার্কেট। এই বাজারে ১০০০টির মত দোকান রয়েছে। মার্কেটটির পুরো নিচতলা জুড়ে কাঁচাবাজার সহ নানাবিধ পণ্য সামগ্রীর দোকান রয়েছে। দু’তলা এখনও মার্কেট হিসেবে চালু হয়নি। টাউনহল বাজারে অন্যান্য এলাকার বাজারগুলোর তুলনায় সুলভমূল্যে পণ্যদ্রব্য কেনাবেচা হয়। এই বাজারে রয়েছে বেশ কয়েকটি চাউলের আড়ৎ যেখান থেকে খুচরা বিক্রির পাশাপাশি অন্যান্য ছোট বাজার ও দোকানে চাউল পাইকারী সরবরাহ করা হয়। এই কাঁচাবাজারে প্রচুর শাক-সব্জি, মাছ, মাংস, মুরগী, ডিম, মুদি সামগ্রী, ষ্টেশনারী সামগ্রী ও সবধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়া এখানে রয়েছে বেশকিছু অনুবাদ কেন্দ্র, রেষ্টুরেন্ট, ফলের দোকান, ক্রোকারীজ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।
টাউনহল মার্কেটের চারপাশে ভ্রাম্যমান চা-ষ্টল, ফলের দোকান ও হকারদের আনাগোনা দেখা যায়। মার্কেটটির একপাশে একটি সুন্দর মনোরম মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদের চারপাশেও চালু রয়েছে বেশ কিছু দোকান। এটাকে মসজিদ মার্কেট বলা হয়। টাউনহল বাজারের আরেকটি মজার বিষয় হলো এই বাজারের সামনে প্রতিদিন ভোরবেলা বসে “শ্রমিকের হাট”। মানুষ তাদের প্রয়োজন মাফিক শ্রমিক বিশেষত: রাজ মিস্ত্রি এখান থেকে দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে সংগ্রহ করে।
সারকথা হলো টাউন হল বাজার এলাকাটি মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া ও আশেপাশের এলাকার মধ্যে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় স্থান। যদিও একসময় এখানে প্রচুর সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্ত লোকের আড্ডা ছিল কিন্তু বর্তমানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এটাকে অনেকটাই নিরাপদ ও সমৃদ্ধ এলাকা বলা যায়।
Comments
Post a Comment